তিন কন্যা সন্তান জন্ম দেয়ায় মা সোনিয়ার রহস্য জনক মৃত্যু

সোনারগাঁও প্রতিনিধি:

পরপর তিন কন্যা সন্তান জন্ম দেয়ায় স্বামী স্ত্রীর মধ্যে প্রচন্ড ঝগড়া বিবাদ লেঘে থাকতো বলে দাবি স্বজনদের তারি ধারাবাহিকতায় এ হত্যাকান্ড ঘটায় পাষন্ড স্বামী সজীব।

নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁ উপজেলার বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের হাড়িয়া চৌধুরীপাড়া এলাকার স্ত্রী সনিয়া আক্তার (২৬) কে স্বামী সজীব (২৮) নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।

বুধবার ৭ সেপ্টেম্বর দুপুরে মৃত অবস্থায় সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ  রেখে পালিয়ে যায় স্বামী সজীব ও তার পরিবারে লোকেরা।

নিহত সোনিয়ার স্বজনদের কাছ থেকে জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবত সোনিয়া ও তার স্বামী সজীবের মধ্যে সাংসারিক ঝামেলা চলছিল। স্ত্রী সোনিয়ার কাছ থেকে তারা জানতে পারে স্বামী সজীব প্রায় সময় নেশা দ্রব্য সেবন করে বাড়িতে ফিরত। মাদক সেবন থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করলে মারধর সহ বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি ধামকি দিত। প্রায় সময় সোনিয়াকে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল। সাংসারিক ঝামেলার অন্যতম আরেকটি কারণ ছিল পর পর তিনবার কন্যা সন্তান জন্ম দেওয়া স্ত্রী সোনিয়ার প্রতি স্বামী সজীবের মন ক্ষুন্ন ছিল। ছেলে সন্তান জন্ম না দেয়াতে তার উপর একাধিকবার আক্রমণ হয়েছিল। স্ত্রী সোনিয়া মুখ বুজে সহ্য করেছিল ও পরিবারের স্বজনদের কে না জানানোর চেষ্টা করলেও একাধিকবার সাংসারিক ঝামেলা ও মারধরের ঘটনা ঘটলে পিতা জলিল মিয়া ও স্বজনদের কাছে জানাতে বাধ্য হয়। সামাজিক মান সম্মানের ভয়ে থানায় অভিযোগ করেনি।

সোনিয়ার বোনের দাবি, তারই ধারাবাহিকতায় গত ৬ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার রাতে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয় সোনিয়াকে রাতভর  নির্যাতন চালায় স্বামী সজীব।

বুধবার ৭ সেপ্টেম্বর দুপুর আনুমানিক সময় ১টায়  মৃত অবস্থায় স্ত্রী সোনিয়ার লাশ স্বামী সজিব ও তার পরিবারের লোকজন সোনারগ াঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রেখে পালিয়ে যায়।

এ ঘটনা সোনিয়ার স্বজনদের কাছে পৌঁছলে তাৎক্ষণিকভাবে সোনারগাঁও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পৌঁছলে  সোনিয়ার মৃত দেহ হাসপাতালে বারান্ধায় পরেথাকা অবস্থায় দেখতে পায়,  স্বামীর বাড়ির লোকজন উপস্থিতি না দেখে সন্দেহ হলে সোনারগাঁ থানায় মামলার জন্য উপস্থিত হন। থানায় হত্যা মামলা নিতে তাল বাহানা করে বলে অভিযোগ করেন সোনিয়ার পিতা আব্দুল জলিল।

এছাড়াও পিতা আব্দুল জলিল জানান, আমার মেয়ে সোনিয়ার মৃত্যু কোনভাবেই  স্বাভাবিক না এটা চক্রান্ত মুলক একটি হত্যাকান্ড। তার স্বামীর বাড়ির লোকজনের আত্মহত্যার দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট ও নাটকীয় গল্প।

যদি আত্মহত্যা করে গলায় ফাঁস দেয় আমাদের উপস্থিতে বা পুলিশ এর উপস্থিতি ছাড়া লাশ কেন নামানো হলো। আত্মহত্যা বা মাডারের লাশ আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ছাড়া কেন লাশে হাত দিল। যেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উপস্থিত ছিল না ও আমরা উপস্থিত ছিলাম না সেখানে তারাই লাশ নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উপস্থিত ।

আমরা এসে লাশ পাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সম্পুর্ণ মিথ্যা বলছে হত্যাকারীরা, আমরা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচার চাই। নিহতের নিকট আত্নীয়রা জানান তিন সন্তানের জননী সনিয়া ও সজিবের দাম্পত্য জীবন ছিলো কলহের। তারা প্রায়ই ঝগড়া করতো। ধারনা করা হচ্ছে স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়ার কারনে মনের ক্ষোভে গৃহবধূ সনিয়া গত রাতে কোন এক সময় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্নহত্যা করেছে।

নারায়ণগঞ্জ কায়েমপুরের বাসিন্দা সোনিয়ার বাবা জলিল মিয়া জানান, আমার মেয়ের জামাই একজন নেশাগ্রস্ত মানুষ। আমার মেয়েকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। তিনি তার মেয়ের জামাই সজিবকে এই হত্যাকান্ডের জন্য দায়ী করেন।

সোনারগাঁ থানার এস আই আনিসুর রহমান তদন্ত গিয়ে বলেন, নিহত সনিয়ার শরীরে কোন আঘাতের চিন্হ পাওয়া যায়নি। গলায়ও কোন ফাঁসির দাগ দেখা যায়নি।

এ বিষয়ে সোনারগাঁ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। গৃহবধূ সনিয়া আত্নহত্যা না হত্যা ময়নাতদন্ত ছাড়া নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। ময়না তদন্তের পর সঠিক রিপোর্ট পাওয়া যাবে।

Related posts

Leave a Comment